December 22, 2024, 8:24 am

সংবাদ শিরোনাম
পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায়

পথ শিশুদের বাঁচতে দেই!!

রাকিব হাসান রাজু  
মানুষের জীবন যাপন চোখে না দেখলে হয়তো বুজতাম না। আমি গ্রামের ছেলে। পড়াশোনার তাগিদে এখন শহরে থাকি। এই নিয়ে অনেক শহরেই আমার দেখা শেষ। শহরে অনেক শ্রেণী পেশার মানুষ থাকে তাদের কেউ ধনী, কেউ মধ্যবিত্ত আবার কেউ গরিব। আবার এমন ও গরিব আছে যারা দুই মুঠো খেতে পারে না। আর এর শিকার হচ্ছে ছোট ছোট শিশুরা। জানেন তারা থাকে কোথায়?  তাদের আবাস স্থল হলো চারদিকে ছেড়া কাপড়, পলিথিন দিয়ে ঘেড়া বাড়ি,ময়লার স্ফুপ থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তৈরি করে ঘর ।আবার আছে পেটে দায়। যখন তাদের বই পড়া সময়  তখন তারা খাবারও পায় না, অর্থাৎ শিক্ষা তো দূর খাবারই পায় না। আর এমন করুন অবস্থা দেখতে বাংলাদেশের যে কোনো শহরে গেলেই হবে, তবে বিশেষ  করে শহরের রেল স্টেশন এর আশে পাশে দেখলেই বুঝবেন, এদের জীবন যাপন দেখলে চোখের জল আটকে রাখা দায়।এদের থাকার জায়গা নাই বলে এরা রেল লাইনের পাশে একটু জায়গা নিয়েই তৈরি করছে বস্তি অনেকে আবার রেললাইনের পাশে,  প্লাটর্ফমে একটা ময়লা  কম্বল নিয়ে শুয়ে পরেছে, আর এভাবেই কেটে যাচ্ছে তার ছয়টি ঋতু । আমরা এবার অনেকে এই সব ছেলে মেয়েদের বা শিশুদের টোকাই বলি। কিন্তু কি করবে তারা বলতে পারেন এভাবেই দিন কাটে তাদের। তাদের বেশি ভাগেরই মা বাবা নেই। কারো কাছে জানতে গেলে বলে ছোট বেলায় বাবা মা তাদের ফেলে চলে গেছে। জানেন কষ্ট টা কোথায় তাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে হয় না তার জানাজা, হয় না দাফন। যাদের সাথে সে ঘুরে বেড়ায় তারাই তাকে কোনো এক ময়লার স্তুপ এর কাছে মাটি খুরে পুতে দেয়,এই জন্য কি সে এই পৃথিবীতে আসছে। শুধু মাএ সুযোগ আর অর্থের ওভাবে আজ ও তাদের দাফন হয় ময়লার কোনো বড় স্তুপ এ । এদের দেখলেই আপনার আমার মতো মানুষ এদের ঘৃনা করে, কাছে ভিরতে দেয় না। তাদের অপরিষ্কার  কাপর  নোংরা শরীর দেখতেই যেন ঘৃন্য লাগে৷ মনে হয় এরাও কি সত্যি মানুষ! নাকি কোনো জানোয়ার।  কিন্তু তারাও নাকি মানুষ। তারা যদি মানুষ হয় তাহলে কেন তাদের এই দূর্দশা ৷ যেখানে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার কথা সেখানে তারা জীবিকার তাগিদে ময়লার স্তুপ এর মধ্যে বসে মেটাল জাতীয় বা লোহা জাতীয় বা প্লাস্টিক জাতীয় কিছু খুজছে যা পাবে তাই অল্প অল্প করে জমা  করে একদিন বিক্রি করবে যার বিনিময়ে পাবে(১৫ টাকা) কেজি দরে।  আবার অনেকে রাস্তায় হাটে বেড়াচ্ছে কাজ খুজছে পলিথিন কুড়ে বেড়াচ্ছে যার বিনিময়ে  একটু খাবার খেতে পারে।তাহলে বলুন তো কেন এরা খারাপ, ভয়ানক, হিংস্র হবে না। কেন রাস্তার পাশে আপনার আমার হাত থেকে মোবাইল  নিয়ে দৌড় দিবে না। কেন খারাপ কাজে লিপ্ত হবে না। কেন দেশের ও সমাজের ক্ষতি করার কথা চিন্তা করবে না৷ কেন দেশকে ও সমাজকে ঘৃনা করবে না,  কেন উচু গলায় বলবে দেশ ও সমাজ আমাকে বাচার সুযোগ দেয় নি, আমি  কেন দেশ সমাজের চিন্তা করবো,  উল্টো তারা দেশের ও সমাজকে ঘৃনা করবে,  কারন সমাজ রাষ্ট  তাদের কিচ্ছু দেয় নি। আচ্ছা শিশুর কি অপরাধ এই রকম পরিস্থিতিতে জন্ম নেওয়াতে,  তার কি বাচার ইচ্ছা নেই ,আচ্ছা একবার ভাবুন তো এদের একটু সুযোগ দেওয়া হলে এরা কি শিক্ষিত হতে পারবে না।তাদের বাবা মায়ের কাছে কোনো কাজ দিলে তারা কি সুযোগ টা পাবে না। অবশ্যই পাবে। কিন্তু আমাদের দেশ হচ্ছে মধ্য আয়ের দেশ।  কর্ম সংস্থান তো নাই৷ মাস্টার্স পাশ করেও লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকার উৎপাদিত  হচ্ছে তাই না! যেখানে শিক্ষিতদেরই এই অবস্থা সেখানে ওই শহরের বস্তির শিশু গুলোর,রেল লাইনের পাশের শিশু গুলোর এমন টা হওয়াটাই স্বাভাবিক। এমন কোনো কাজ করা যায় না ওই রেল স্টেশনেরই পাশে একটা বড় অট্টালিকা তৈরী করে একসাথে ৮০০/১০০০ পথ শিশু কে রাখা যায় না৷ তাদের জন্য একটা স্কুল দেওয়া যায় না।  তাদের একটু সুযোগ দেওয়া যায় না,  এখন বলবেন টাকা কই এত। আপনার আমার দেশে ও হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক ও আছে,  তারা মনে হয় মৃত্যুর পর এসব টাকা নিয়ে  কবরে / পরপারে যাবে তাই না।এসব কোটি টাকা ধারীদের শুধু টাকাই  থাকে তাদের থাকে না মন, থাকে না মায়া, থাকে না মমতা,থাকে না আবেগ, থাকে শুধু নিজ স্বার্থ হাসিলের ধান্ধা। তবে এই কাজ গুলো সরকারের করা উচিত। দেশে হাজার হাজার সরকারি জায়গা  অকেজো হয়ে পড়ে আছে সেগুলোতে তাদের ব্যাবস্থা করা যায় না কি? শিশু শ্রম তো নিষিদ্ধ কিন্তু কই তা তো চলছেই। তাদের পিছনে ব্যায় করা টাকা তারাই তুলে দিতে পারবে। তাদের শ্রম দেওয়ার অভ্যাস আছে,  নিজের খাবার পোশাক নিজে যোগার করতে পারবে, যদি তাদের  দিনের কোনো এক সময় কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এখন বলবেন তাদের দ্বারা কি কাজ হবে, আরে কত কুটির শিল্পের  কাজ আছে। কুটির শিল্প গুলোরও বাহিরের দেশে অনেক চাহিদা। তাদের দ্বারাই তৈরি করে নেন বিনিময়ে তাদের থাকা খাওয়া আর পড়ার সুযোগ দেন।এতে তাদের জীবন টাও সুন্দর হবে।  দেশে বেকার ও কমবে টোকাই ও কমবে শিশুদের ভারী শ্রম ও কমবে।  দেশের অথনীতিতে তারাও অবদান রাখতে পারবে। দেশের মোট বাজেটের কিছু অংশ তাদের পিছনে ব্যায়  করলে বলতে পারি ইনভেস্ট করলেই  যদি হাজার হাজার শিশুর জীবনও আমাদের মতো স্বাভাবিক হয় তারাও অর্থনীতিতে অবদান রাখে তাহলে দেশের উন্নতি নিশ্চিত।
আপনি,আমি,আমরা অনেকেই  তো  নানা ধরনের দিবস পালন করি, জন্মদিন পালন করি, পার্টি করি, ট্টিট দিই ইত্যাদি ইত্যাদি,আচ্ছা  আমরা কি পারি না সেদিন দুই/তিন জন পথ শিশুকে নিয়ে খাওয়াইতে। একটা দিন খাওয়াই দেখেন কেমন অনুভূতি হয়। এভাবে আমরা সবাই যদি ২/৩ জন করে খাওয়াই তাহলে দেখবেন অনেক পথ শিশু একবার পেট পুরে খেতে পারবে। আবার আমরা অনেকে দামি দামি রেস্টুরেন্টে খাইতে বসে একটু খেয়েই উদ্ধৃত রাখে দিই। আচ্ছা সেগুলো একটু প্যাক করে নিয়ে (বলবেন খ্যাত, সম্মান হানি হবে, আমার মতে কাজটি মহৎের পরিচয়) আসার পথে কোনো পথশিশুর হাতে দিতে পারি না, এই উদ্ধৃত খাবারটি পেয়েই তার মুখের হাসি টা দেখবেন মন জুড়ে যাবে।
রাকিব হাসান রাজু
দর্শন বিভাগ,২য় বর্ষ
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর